Rose Good Luck Rose কয়েকজন বাবা (একটি সম্পুর্ণ গল্প) Rose Good Luck Rose

লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:৩৯:৫৯ সন্ধ্যা



Rose Good Luck...

রফিক সাহেব সেই ভোর সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠেন।

প্রতিদিন।

এলার্ম ঘড়ির সাহায্য লাগে না। নিজের ভিতরের সেট করা অ্যালার্ম ই তাকে জাগিয়ে দেয়। একটুও এদিক সেদিক হয় না। ফজরের নামাজ মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করেন। এরপর তাবলিগ জামাতের সদস্যদের সাথে কিতাবে তালিমে বসেন। মিনিট দশেক সেখানে ব্যয় হয়।এরপর ফ্যাক্টরীতে গিয়ে লক ডিউটি। ৬ তলা বিল্ডিং এর প্রতি ফ্লোরের সামনে পিছনে দুটি করে তালার সীলগালা চেক করা। কাজের বুয়া সময়মত এসে রান্না করে দিয়ে যায়। ব্যক্তিগত সব কাজ সেরে ৮টার ভিতরেই অফিসে পৌঁছে যান।

আব্দুল হালিম সাহেব সিনিয়র স্টোরকিপার। এই ফ্যাক্টরীতে গত ২১ বছর যাবত রয়েছেন। সেই ইন্টার পাস করার পরে আর সুযোগের অভাবে পড়ালেখা চালাতে পারেননি। আবার নিজের বাবার সাথে মাঠে গিয়ে হালও ধরতে সংকোচ হয়েছে। ওনার বাবাও সেটা করতে দেননি।বলেছেন, 'যেটুকু বিদ্যে অর্জন করেছিস, দ্যাখ চাকরি-বাকরি কিছু পাস কিনা।' বাবার কথামত সেই যে চাকরিতে ঢুকলেন, আজো করছেন। তখন অবশ্য পোষাক শিল্পের একেবারে প্রথম দিক। অফিসে রফিক সাহেব তার সিনিয়র। দুজনে বসেন পাশাপাশি। রফিক সাহেবেরও তা প্রায় ১৪ বছর পার হল গত মাসে।

শিমুল বাবুর বাড়ি কারখানার মালিকের গ্রামেই। সে আর হেলাল একই গ্রামের। শিমুল বাবু স্টোরকিপার। হেলাল স্টোর সহকারি। হেলাল পরিবার নিয়েই অফিসের পাশে থাকে।এক ছেলেকে নিয়ে হেলালের ছোট্ট সংসার।কারখানা লাগোয়া একরুমের বাসায় মোটামুটিভাবে দিন কেটে যাচ্ছে ওর। শিমুল বাবু এবং সে লেবেল সেকশনটা দেখে থাকে। সুইং সেকশনের সাথে ওদের লিঙ্ক। সারাদিন লেবেল রিসিভ আর ইস্যু দিয়ে দিন শেষে ক্লোজিং বের করে দিয়েই তবে ওদের ছুটি। এরপরও বসের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। হেলালের ছেলেটা ৫টা বাজলেই বাবার অপেক্ষায় থাকে। মাকে কিছুক্ষণ পরপর বিরক্ত করে। শিমুলের অবশ্য সেই ঝামেলা নেই। অন্য তিনজনের সাথে মেসে থাকে সে।

বাকীবিল্লাহ এবং ফরহাদ দুজনেই স্টোরকীপার। অ্যাক্সেসরিস ইন্সপেকশন করে ওরা দুজন। বাকীবিল্লাহ মেসে থাকলেও ফরহাদ পরিবার নিয়ে থাকে। ওর বাসা অবশ্য কারখানা থেকে বেশ দূরে। এজন্য প্রতিদিনই ফরহাদের অফিসে পৌঁছাতে লেট হয়। বসের চোখ রাঙ্গানি আর মাঝে মাঝে বকাও শুনতে হয়।

আকরাম হল বসের সব থেকে প্রিয়পাত্র। এই পুরো স্টোরের কোথায় কি আছে একমাত্র আকরামেরই নখদর্পণে। অন্যরা যার যার ইউনিটের খবর রাখলেও আকরাম সবকিছুই জানে। অবশ্য ওর পদবি লোডারের। আকরাম বিবাহিত এবং ওর বউ আর দুই শ্যালিকাকে নিয়ে থাকে। এক ছেলে গ্রামের বাড়ি আকরামের মায়ের কাছে থাকে। মাঝে মাঝে এখানে নিয়ে আসে। এভাবেই কেটে যাচ্ছে ওর জীবন।

এই সাতজনকে নিয়ে স্টোরের বসের এই আলাদা ভুবন। তিনি নিজের বাসা থেকে প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করেন। অফিস থেকে ঘন্টাখানিক দূরত্বের পথ হলেও একেবারে ৮টা বাজার ৫ মিনিট আগে নিজের সীটে এসে বসেন। রোদ-ঝড়-বৃষ্টি কোনো কিছুই তার এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাতে পারে না। বসের দুই মেয়ে। এই কারখনায় এই জুনে তার তিন বছর পুর্ণ হবে।

কারখানাটির নাম নাইবা জানালাম। মানুষগুলোর পরিচয় দিয়েই গল্পটি শুরু করি। এই মানুষগুলো অনেকটা যন্ত্রের মতো হয়ে গেছে। ছুটি-ছাটা খুব কমই পায় এরা। আর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের বেতন নিয়ে তারা দৈনন্দিন ছোট ছোট চাওয়া-পাওয়াগুলোকেই পুরণ করতে হিমশিম খেয়ে যায়। এরা মন-মানসিকতায় এক একজন অন্যজনের থেকে ভিন্ন।

কিন্তু একটি দিক থেকে এদের ভিতর ১০০% মিল।

এরা সবাই এক একজন বাবা।

আর সন্তানের প্রতি তাদের রয়েছে অকৃত্তিম ভালবাসা।

এই একটি দিকের মিল এই সাতজনকে ক্ষীণ এক সুতোর বন্ধনে আবদ্ধ রেখেছে, যা প্রায় প্রতিদিনই ছিড়ে যায় যায়- আবার কিভাবে যেন আরো মজবুত হয়।

...

কোথায় যেন ধূপের গন্ধ...

দমকা বাতাস নিমিষে দ্রুতধাবমান বাসের গতিতে চামড়াবৃত রক্ত পরিশুদ্ধকারী একটি জটিল মাংসপিন্ডকে রিফ্রেস করে দিলো।

অখন্ড অবসর...

ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলা টো টো সাজ্জাদের জটিল এক আইডিয়ার বিশ্লেষণরত ব্রেইনকেও সতেজ করে এই ঘ্রাণ।

ডাইনে-বামে অহেতুক তাকিয়ে ঘ্রাণের উৎস খুঁজে দেখার অপচেষ্টা চালায় সে। তবে পরবর্তী ক’সেকেন্ডেই অন্যান্য আরো অনেক অতীত মৃত চিন্তার মতই এটাও ডিলিট হয়ে সোজা রিসাইকেল বিনে যায়গা করে নেয়। একটু আগের করা কাজটি ব্রেইনে এক সুখানুভূতির আবেশ এনে দিয়েছে।

সেটাই হাঁটতে হাঁটতে উপভোগ করছে।

সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়ানোর জন্যই ওর নাম টো টো সাজ্জাদ হয়ে গেছে। বন্ধুমহল থেকে শুরু করে ওর বাসার সবাই- এমনকি শায়লা পর্যন্ত জানে।

শায়লা!

নামটিই কেমন এক অদ্ভুদ প্রশান্তি এনে দেয়।

সবসময়।

চকিতে অন্য মানুষে পরিণত হয় সাজ্জাদ। ব্রেইনের একটু আগের সুখপ্রদ-বিকৃত আনন্দটুকু কীভাবে যেন ঢেকে যায় শায়লাকে মনে করার সাথে সাথে।

মটর বাইকে করে এলাকায় অস্থির অলসতায় ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কাজও সে করে। বাসায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখাশুনা করাটাই প্রধান কাজ। আর মাসের শেষে বাড়ির ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করা, পানি-গ্যাস-বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করা- এ সবই সে করে। ওর বড় ভাই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। প্রতিমাসে একবার বাবা-মাকে দেখতে আসে। তাই বাবা-মার প্রতি ভালবাসার বড় ভাই এর অংশটুকুও সে প্রতিদিন নিজের মত করে ছড়িয়ে দেয়।

এর মাঝে নিজের বিকৃত মস্তিষ্কের চাহিদাটুকুও পূরণ করতে হয়।

বিকৃত কথাটা বলা একটুও ভুল হচ্ছে না। সাজ্জাদের খুব প্রিয় একটি কাজ হচ্ছে, এলাকায় নতুন কেউ এলে ইচ্ছেকৃত সে ভুল ঠিকানা দেখিয়ে দেয়। আর নতুন মানুষটি যখন এক গলি থাকে অন্য গলিতে ঘুরপাক খায়, সে বাইকে করে দূর থেকে দেখে এই আনন্দটুকু লাভ করে।

আলমগির মুন্সীর চায়ের দোকানের পাশে ওর বাইকটা স্ট্যান্ড করা।

বাইকের ঘাড়ের লক খুলে স্টার্ট বাটন পুশ করে আশপাশ সচকিত করে একটা ইউ টার্ণ নিয়ে বেরিয়ে পড়া সুদর্শণ সাজ্জাদ মুহুর্তে টো টো সাজ্জাদে পরিণত হয়। ঠোঁটের কোণে অদ্ভুদ হাসি। এইমাত্র নতুন একটি আইডিয়ার জন্ম হয়েছে ওর উর্বর মস্তিষ্কে।

শায়লা অনেকক্ষণ ধরে রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছে। যাও বা পাচ্ছে সবই ওর উল্টো পথের। এই ভরদুপুরে সবাই যার যার বাসায় কিংবা নিরাপদ কোনো ছায়াঘেরা যায়গায় যেতে চাচ্ছে। বান্ধবী রিতার বাসায় এসে ফেঁসে গেলো শায়লা। একটা অটো নিয়ে চলে যাবে কিনা ভাবল একবার।

দূর থেকে শায়লাকে দেখছে সাজ্জাদ। ও যেখানে আছে সেখান থেকে শুধু শায়লাকেই দেখা যাবে। শায়লা ওকে সেইভাবে দেখতে পাবেনা। বাইকের লুকিং গ্লাস দিয়ে বিপরীত দিক থেকে শায়লাকে দেখছে সে। শায়লা যদিও এদিকে তাকায় তবে শুধু পিছনের অংশই দেখতে পাবে। পিছন থেকে দেখেও কি সে চিনবে সাজ্জাদকে?

এই মেয়েটিকে দেখলেই কেমন যেন হয়ে যায় সাজ্জাদ। ওদেরই ভাড়াটিয়া। বৃদ্ধা মা এবং ছোট এক বোনকে নিয়ে থাকে ওরা। তৃতীয় তলার ডান পাশের ফ্ল্যাটে। একেবারে সাজ্জাদদের সরাসরি নীচের ফ্ল্যাট। শায়লার বড় এক ভাই আছেন। সে ঢাকায় এক পোশাক কারখানায় ভালো পোষ্টে চাকরি করে। সেখানেই দুই মেয়ে আর বউকে নিয়ে থাকে। তবে মাকে ও বোনদেরকে দেখার জন্য প্রতি মাসে একবার আসবেই। যতই কাজ থাকুক না কেন। নিজের ফুল ফ্যামিলি নিয়ে আসে।

সেই ক'টা দিন শায়লার খুব আনন্দে কাটে। দিন না বলে ক’টা রাত বললেই বেশী মানানসই হয়। ভাইয়া তো বৃহষ্পতিবার এসে আবার শুক্রবার রাতে চলে যায়। তবে ভাবী ও বাচ্চারা কখনো দু-তিনদিন থেকে যায়। এই ভাড়া বাসাটি তখন শায়লার কাছে নিজের বাড়ির মত শান্তি এনে দেয়। সেই যে বাবা বেঁচে থাকতে ওদের গ্রামের বাড়িতে সবাই মিলে একসাথে থাকার সময় যা অনুভব করত। আসলে পরিবারের সবাই এক সাথে থাকার আনন্দের সাথে অন্য কোনো কিছুর তুলনাই হয় না।

গরমে ঘেমে অস্থির হয়ে আছে। বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু স্টপেজে কোনো বাসও আসছে না সেই অনেকক্ষণ হয়ে গেলো। শায়লা বিরক্তির একেবারে চরমে পৌঁছে গেলো। ঠিক তখনই উল্টো দিকে সাজ্জাদের পিছনটা সে দেখতে পায়।

এবং চিনে ফেলে।

মেয়েদের ভিতরে অনেক অদ্ভুদ জিনিস আছে। একইসাথে এদের অতিরিক্ত একটি ইন্দ্রিয় রয়েছে। অদৃশ্য কিছু অতি সহজে বুঝে ফেলার... দ্রুত উপলব্ধি করার এমন কিছু সহজাত ক্ষমতা পুরুষের থেকে এদের বেশী। তবে এই এরাই আবার খুব কাছ থেকে সহজ অনেক কিছুও অনেক দেরীতে বুঝে। সাজ্জাদ নামের এই ছেলেটি যে ওকে কেন্দ্র করেই চিন্তা-ভাবনার এলোমেলো জগতে সর্বক্ষণ অবস্থান করে, সেটাও মেয়েলি এই বিশেষ ক্ষমতাবলে সে বুঝে গেছে।

বড় করে নিঃশ্বাস নিয়ে হেঁটে হেঁটে সাজ্জাদের বাইকের পাশে এসে দাঁড়ায়। লুকিং গ্লাসে শায়লাকে ওরই দিকে আসতে দেখেও একচুল নড়তে পারেনা সাজ্জাদ। চোরের মত ধরা পড়া অভিব্যাক্তি নিয়ে ফুটপাতের দিকে তাকিয়ে রইলো। বেশ স্বাভাবিকভাবেই শায়লা বলল, ‘ চলুন, বাসায় যাই’।

নীরবে শায়লাকে বাইকে বসার যায়গা করে দিয়ে একটু সামনে সরে বসে সাজ্জাদ। ওরা দুজন যখন বাইকে করে চলে যায়, নিজের খুব কাছে স্বপ্নের রাজকন্যা থাকা সত্তেও কেন জানি চিরতার পানি পান করাকালীন অভিব্যক্তি নিয়ে থাকে সাজ্জাদ। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় সে কেন জানি কোনো আনন্দ পায়না। ওর সকল আনন্দের উৎস বিশ্লেষণধর্মী ব্রেইনে এই মুহুর্তে কোনো অনুভুতিই নেই। সব শূন্য হয়ে আছে। শুধু নিয়ম মেনে বাইক চালিয়ে বাসায় পৌঁছানোতেই ব্রেইনের সবটুকু অংশ মগ্ন হয়ে আছে।

...

আজ সবার সামনে বসের বকা শুনতে হয়েছে।

রফিক সাহেব মন খারাপ করে আছেন।

বাড়ি থেকে ইতোমধ্যে ওনার ওয়াইফের ফোন এসেছে দু’বার। ইচ্ছে করেই রিসিভ করেন নাই। এখন কথা বললেই সে বুঝে যাবে যে তাঁর মন খারাপ। অফিসের যে কোনো ঘটনা এতগুলো বছর অফিসগেট পর্যন্তই ছেড়ে এসেছেন। কখনো নিজের ব্যক্তিগত জীবনে এগুলো পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শেয়ার করেননি।

পি-টু লাইনের সুপারভাইজার সুতা নিতে এসেছে। রিকুজিশন স্লিপ চেক করে ‘ম্যাটেরিয়াল ইস্যূ রেজিস্টারে’ ওর স্বাক্ষর নিলেন। আকরামকে সুতা দিতে বলে দিলেন। ১০ কোন রি-কোনিং এর জন্য রেখে দিতে বলতে ভুললেন না। ‘হ্যা, তোমার কি’ বলে কিঊতে অপেক্ষমান পরবর্তী সুপারভাইজারের দিকে ফিরলেন।

হেড অফিস থেকে কমার্সিয়াল এ,জি,এম মেইল পাঠিয়েছেন। এটাচমেন্টে রয়েছে শিপমেন্ট ইনফরমেশন। আজ যেগুলো এক্স-ফ্যাক্টরী হবে সেগুলোর। ইনভয়েস এবং প্যাকিং লিস্ট প্রিন্ট করে ফিনিশিং এর সহকারি ম্যানেজার জাহিদ সাহেবের কাছে পাঠালেন। রফিক সাহেবকে ডেকে চালান এবং গেট পাস লিখে ফেলতে বলেন। ভ্যাটের চালানে ভ্যালু বসানোর জন্য মেইলের প্রিন্ট কপি দিলেন শিহাব সাহেব ।

তিনি এই স্টোরের দায়িত্বে রয়েছেন।

উত্তরা থেকে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করেন। দুই মেয়েকে নিয়ে লিলি সেখানেই থাকে। প্রতিদিন সকাল সাতটায় সিঁড়িতে বিদায় জানানো আর রাত ৮টার পর থেকে বারান্দায় অপেক্ষা করা... এভাবেই চলছে দুই মেয়েকে নিয়ে লিলির প্রতিদিন-সপ্তাহ-মাস-বছর। এই জীবনেই ওরা দুজন মানিয়ে নিয়েছে।

একটু আগে রফিক সাহেবকে অনেক বকা দিয়েছেন।

দিতে হল।

অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেন না। আগামিকাল শিপমেন্ট। অথচ টেক্সম্যান ৪২৭ অর্ডারের জন্য সুতাই অর্ডার দেয়া হয়নি। এখন কোটস এ অর্ডার পাঠালেও ওদের কমপক্ষে ৫ দিন লাগবে। এটা জেনেও ওখানের কাস্টোমার সার্ভিস অফিসারের সাথে মোবাইলে কথা বললেন।

নাহ, এই শেডের কোনো স্টক ওদের ওয়্যারহাউজে নেই। শেষ চেষ্টা হিসাবে বেসিকেও ফোন দিলেন। তারাও এই সময়ের ভিতরে দিতে পারবে না। অথচ গত সপ্তাহে সুইং থ্রেড এর ‘পেন্ডিং স্ট্যাটাসে’ রফিক সাহেব এই অর্ডারটি পেন্ডিং লিস্টে দেখান নাই। বরং অর্ডারটির রিমার্ক্স এ ‘রিসিভ ওকে’ দেখিয়েছেন।

মোটে একটা কালার হওয়াতে একটু যেন আশার আলো দেখতে পেলেন। ওয়্যারহাউজ-বি তে খুঁজলে হয়তো পেয়েও যেতে পারেন। সাতচল্লিশ কোন সুতা লাগবে।

তবে তাঁর আগে রফিক সাহেবকে ইচ্ছে মত বকে নেয়া দরকার। প্রায় ৫৮ বছর বয়সী এই মানুষটিকে ধমকাতে কি তারও ভালো লাগবে? কিন্তু এটা না করে যদি অফিশিয়াল অ্যাকশনে যান, সেটা ওনার জন্য আরো খারাপ হবে। ম্যানেজমেন্ট অপেক্ষা করে আছে একটা মেজর মিসটেকের। হয়তো এবারে ওনাকে টার্মিনেটই করে দিবে। কিছুদিন আগে ডিরেক্টর স্যারের কথাতেও এমন আভাষ পেয়েছেন।

তাই এইরকম ভুল যেন আর না হয়, সেজন্য ইচ্ছেমত বকা দিলেন। মাথা নীচু করে রফিক সাহেব শুনে গেলেন। কিছু তো বলারো ছিল না। চুপচাপ নিজের সীটে গিয়ে বসে রইলেন।

আকরামকে ফেব্রিক সোয়াচ সহ শহীদ সাহেবের কাছে ওয়্যারহাউজ বি তে যেতে বলেন। ফোনে শহীদ সাহেবকে বললেন সোয়াচের সাথে মিল রেখে ১৮-২০ এরকম ম্যাচিং হলেও সুতা দিয়ে দিতে।

একটু রিল্যাক্স করার জন্য রিভলবিং চেয়ারে পিঠ এলিয়ে দেন।

দুচোখ বন্ধ করে ব্রেইনকে শূন্য করে দিতে চাইলেন।

কিন্তু চাইলেই কি একেবারে শূন্য করা যায়?

নিজের কাছে খারাপ লাগছে। শারিরীক ও মানসিক- দু’ভাবেই। বাবার বয়সী লোকটাকে বকা দিতে গিয়ে নিজেও কি কম উত্তেজিত হয়েছেন? চল্লিশ পার হয়েছে দু’বছর আগে। সারাদিন বসে থাকার চাকরি। দিন দিন শরীরটাও কেমন স্থুল হয়ে যাচ্ছে।

নাহ!

আর এভাবে উত্তেজিত হওয়া যাবে না।

লাঞ্চের আর আধা ঘন্টা বাকি।

রফিক সাহেব ওজু করে এসেছেন। নিজের সীটে বসা। এই অবস্থায় মোবাইলে ফোন এলো।

ছেলের ফোন!

মুহুর্তেই অন্যরকম এক ভালো লাগা মনের আঙ্গিনায় এসে ভীড় করে।

সবসময়ই এরকম হয়।

দুই মেয়ে আর এই একমাত্র ছেলেটিকে নিয়েই রফিক সাহেবের জগত। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। সে ঘরে দুই নাতি। ছেলেটি মেঝ। এম,বি, এ শেষ করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার হিসাবে জব করছে। তা প্রায় বছরখানেক হয়ে গেছে। ছোট মেয়েটি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। বাড়ীতে মাকে নিয়ে সে থাকে।

ঢাকাতে- একই শহরে থাকার পরেও বাবা-ছেলের ভিতর দেখা খুব কমই হয়। রফিক সাহেব প্রতি মাসে বেতনের পরে শুক্রবার মিলিয়ে একদিন ছুটি নিয়ে বাড়ীতে যান। সবাই একত্রিত হন তখন। বড় মেয়ে এবং মেয়েজামাই আসে। ছেলের শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকাতে সেও আসে।

জীবনটাকে কেমন সম্পুর্ণ মনে হয় তখন।

আর মাসের বাকি সময়টা সেই একঘেয়ে মেস জীবন...

আসলে রফিক সাহেবের এই বয়সে সবাইকে নিয়ে একসাথে থাকার সময়। নাতিদেরকে নিয়ে ফুর্তি করবেন... অথচ বাস্তবতা কি নির্মম!

তিনি এখনো কল্পনাই করতে পারেন না এই চাকরিটা ছেড়ে দিবেন... কিংবা তাঁকে ভদ্রভাবে চলে যেতে বলা হবে।

কত কাজ এখনো বাকি!!

ছোট মেয়ের বিয়ে দিতে হবে... ছেলের বিয়ে... তাঁর আগে পুরনো টিনশেড ঘরটাকে ভেঙ্গে একটা ছোট বিল্ডিং...

কবে যে হবে!

ছেলের সাথে কথা বলছেন... একটু আগের মন খারাপ ভাবটা একটু একটু করে মিইয়ে যাচ্ছে। আশেপাশের সহকর্মীরা মুগ্ধ চোখে বাবা-ছেলের তারহীন যোগাযোগ দেখছে... সেই দৃষ্টিতে সহকর্মীর জন্য স্নেহ-মমতার মিশেলে অন্য এক ভালোবাসা। ওরাও তো এক একজন বাবা। তাই উপলব্ধিটা প্রায় সবারই একইরকম...খুবই কমন।

তবে রফিক সাহেব আশাপাশ বিস্মৃত!

কথা বলেই চলেছেন। যখন মোবাইলটা রেখে দিলেন, এই পৃথিবীর সকল দুঃখ-কষ্টও যেন সাময়িকভাবে হারিয়ে গেছে। মুহুর্তটা এক ঝলমলে বিকেলের অনুভুতি এনে দিয়েছে। বসের দিকে তাকিয়ে এক স্নেহাতুর পিতার অনুভুতি অনুভব করলেন।

শিহাব সাহেবের মোবাইল বাজছে।

ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে মোবাইলের ডিসপ্লেতে ভেসে উঠা নামটি দেখামাত্রই অন্য সব কাজ গৌণ হয়ে গেলো।

ছোট মেয়ে ফোন করেছে! রিসিভ করতেই একঝাক রঙিন প্রজাপতি শব্দমালা হয়ে অনুভুতিতে দোলা দিয়ে যায় শিহাব সাহেবের।

- হ্যালো পাপা?

: হ্যা, আম্মু! তুমি কেমন আছ?

- ভালো। আচ্ছা পাপা, তুমি কি আম্মুকে একটু ফোন করতে পারবে?

: কেন আম্মু? কি বলতে হবে?

- তোমার ল্যাপটপটা আমাকে একটু ধরতে দিতে। আমি গেমস খেলবো।

: আচ্ছা বলে দিচ্ছি।

দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া ছোট মেয়ের সাথে প্রায়ই এরকম টুকটাক কথা হয়। ফোন কেটে লিলির নাম্বারে ডায়াল করলেন। তবে অন্যরা তাঁর উদ্ভাসিত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, সেটা খেয়াল করলেন না। মনে মনে ভাবছেন,’আচ্ছা, বাবার ভালোবাসাও কি ভাগ হয়?’ তাঁর দুই মেয়ের ভিতরে ছোটটির জন্য একটু বেশী টান তবে কেন অনুভব করেন? দুজনের জন্য তাঁর ভিতরে ভালবাসার অনুপাত ৪৮ : ৫০ হবে। কেন এমন হয়?

একই সময়ে এখান থেকে কয়েকশ’ মাইল দূরে নিজের জন্মদাত্রী মায়ের মুখটি ভেসে উঠে। ছোট বোন শায়লা যাকে আগলে রেখেছে। মায়ের কাছেও শিহাব সাহেব সকল ভাইবোনদের ভিতরে সবচেয়ে আদরের ছিলেন।

ছিলেন? নাকি এখনো আছেন। হয়ত তিনি বুঝতে পারেন না।

এইমাত্র এক মায়ের সাথে কথা বলে যে আনন্দটুকু লাভ করলেন, সমান পরিমান ব্যথাও অনুভব করলেন নিজের জননীর জন্য। কত বলেছেন,’ চল মা, আমাদের সাথে থাকো।‘ কিন্তু মা রাজী হন নাই। লিলির সাথে মায়ের এক অদৃশ্য দূরত্ব এই ‘না’ এর কারণ।

একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করলেন।

আকরামও এলো তখুনি।

হ্যা, ৪২৭ অর্ডারের সুতা পাওয়া গেছে।

হাসিমুখে রফিক সাহেবকে ডাকলেন।

তিনি এলেন।

দু’জনে মুখোমুখি বসে আছেন।

দুইজন বাবা!

এরা একটু আগে নিজ নিজ সন্তানের সাথে কথা বলেছেন। হৃদয়ের গোপন শিরাতে উৎসারিত পিতার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। কিছুক্ষণ আগের মনোমালিন্য এখন আর একটুও দুজনের ভিতরে অবশিষ্ট নেই। তার বদলে অদ্ভুদ এক প্রশান্তিতে শ্রান্ত দু’জন!

এভাবেই চলছে জীবন... চলবে।

হয়তো কিছুক্ষণ পর অথবা আগামীকাল কিংবা তারপরের দিন অন্য কোনো ভুলের কারনে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে... কিছু উত্তেজনা বিরাজ করবে এই রুমে... আর একটা ফোন কল সব কিছুর অবসান ঘটাবে...

এভাবেই... পৌনঃপুনিক চলতেই থাকবে বাবাদের জীবন!

শিহাব সাহেব বিস্মিত হয়ে ভাবেন, রোজই বাবাদেরকে এক একটা নতুন যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়।

বাবারা কতই না জটিল চক্রে আবর্তন করেন!! Rose Good Luck

(শেষ)

বিষয়: সাহিত্য

১০৮৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

266549
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৯
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:০৬
210285
মামুন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।Happy Good Luck
266553
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:০৪
ফেরারী মন লিখেছেন : মেয়েদের ভিতরে অনেক অদ্ভুদ জিনিস আছে। একইসাথে এদের অতিরিক্ত একটি ইন্দ্রিয় রয়েছে। অদৃশ্য কিছু অতি সহজে বুঝে ফেলার... দ্রুত উপলব্ধি করার এমন কিছু সহজাত ক্ষমতা পুরুষের থেকে এদের বেশী। তবে এই এরাই আবার খুব কাছ থেকে সহজ অনেক কিছুও অনেক দেরীতে বুঝে।

এত সুন্দর করে কিভাবে লেখেন? সারাক্ষণ কি এসব নিয়েও পড়ে থাকেন? লেখা ঝাক্কাস হৈছে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১১
210291
মামুন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আগে একসময় এগুলো নিয়ে পড়ে থাকতাম। তখনকার অভিজ্ঞতার আলোকে এখন লিখে চলেছি।
অনেক শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।Happy Good Luck
266619
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৫২
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : আপনার লেখায় অভিজ্ঞতার গন্ধপাই...এত্তো গুছিয়ে ভাই আমার পক্ষে লিখা অসম্ভব...আমার ইমুশন ১৪/২০লাইনের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়...অসাধারন লিখেন আপনি...!!!
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৫৬
210361
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই।
লিখতে লিখতে কিভাবে যেন লিখা চলে আসে।
শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Happy Good Luck
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৯
210365
ফেরারী মন লিখেছেন : আব্দুল মান্নান মুন্সী ভাইয়ের সাথে একদম সহমত জ্ঞাপন করছি। আমি আমার সোয়া ৫ বছরের অনলাইন জীবনে মুন্সী ভাইয়ের মত পোক্ত কবি এবং মামুন ভাইয়ের মত পরিপূর্ণ গল্পকার খুব কমই (দেখেছি বলে মনে আসছে না) দেখেছি। তাঁদের এই অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে হৃদয়ের ভিতর থেকে তাদের দোয়া ও ভালোবাসা। Rose
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৪২
211045
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : ফেরারিকে সত্যই এবার খুঁজে বাইর করে মাইর দিতে হবে এতো বড় সাহস আমার মতো ছেরাবেরা লেখককে কিনা আরো ছেরাবেরা করে....!!!মামুন ভাইয়ের ব্যাপারে আমি ১০০%সহমত তবে ফেরারি উৎসাহে আমি আপ্লোত
খুব বড় মনের মানুষরাই পারে নগন্যকে সম্মান দেখাতে ফেরারিকে আমার সেলুটPraying
266636
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩৮
মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন : মামুন ভাই নাম পরিবর্তন করেছেন বলবেন না, আর আমি আপনাকে হারিকেন দিয়ে খুজতেছি। আর মনে হয় আমার নিকটাও পরিবর্তন করে দিবে।
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:২১
210442
মামুন লিখেছেন : হ্যা ভাইয়া, নিকটি বাংলায় পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছিলাম। সম্পাদক মহোদয় মঞ্জুর করেছেন।
আপনারটিও পরিবর্তন হলে আমায় জানাবেন। আমাকে অন্তত হারিকেন দিয়ে খুঁজতে হবে না আপনাকে আশাকরি।
ধন্যবাদ।Happy Good Luck
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
210476
মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন : পরিবর্তন হলে আপনাকে জানাবো, ইনশাআল্লাহ
266665
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:৫৫
কাহাফ লিখেছেন :
ঐশী নির্দেশিত জান্নাতের দরজা 'বাবা' রা সন্তানদের জন্যে সবসময়ই নিজেদের কে উন্মুক্ত করে রাখেন এক পৃথিবী স্নেহ-ভালবাসা বুকে নিয়ে। উপরে কঠিনতার প্রলেপে সীমাহীন নম্রতায় পূর্ণ বেহেশ্তের এই দ্বারগুলো আলতো ছোয়াতেই খুলে যায় সন্তানদের জন্যে।
সকল 'বাবা'দের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই........।
মামুন ভাইকেও..... যিনিও একজন 'বাবা' অভিনন্দন। Rose
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:২৩
210443
মামুন লিখেছেন : সহমত ভাই।
আপনার জন্য রইলো আমার হৃদয়ের উষ্ণতম ভালবাসার পরশ এবং অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Happy Good Luck
266678
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৫:৩২
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : সুন্দর ভাবনার গভীর প্রকাশ। বাবাদের নিয়ে লেখাগুলো সবসময় আমাকে খুব বেশি ছুঁয়ে যায়। আমরা বেশীরভাগ সময় বাবাদের দিকে অতোটা মনোযোগী হইনা। বাবারা হয়তো সেটাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। সন্তানের হৃদয়ে বাবারা ভালোবাসার চাদরে মোড়ানো এক স্নেহশীল বটবৃক্ষ হয়ে বেঁচে থাকুক সারাটি জীবন। অশেষ ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও শুভকামনা রইল বাবাদের জন্য।

মুগ্ধ করার মত সব লেখনী আপনার। কখনও স্টিকি কেন করেনা বুঝিনা। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে Good Luck Rose Good Luck
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:২৪
210444
মামুন লিখেছেন : আপনার অনুপমেয় মন্তব্যটি আমার হৃদয়কে ছুঁয়ে গেলো!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাদের মত ব্লগারদের সাথে থাকতে পারছি, এটিওই আমার জন্য অনেক পাওয়া।
শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Happy Good Luck
267360
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:২৭
মামুন লিখেছেন : ফেরারী মন ভাই ঠিকই বলেছেন আব্দুল মান্নান মুন্সী ভাই।
আমিও ফেরারী ভাই এর সাথে ১০০% সহমত।
ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা। Rose Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File